এক পিস ১৫ টাকা, লোভ বেড়েছে ‘ডিম সিন্ডিকেটে’র

সংকট নেই, তারপরও সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম আরেক দফা বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রাজধানীতে এখন ব্রয়লার মুরগির একটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা করে। আর এক ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৬৫ টাকায়।

খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, করপোরেট ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বাড়াচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে ক্রেতাদের কাছে বেশি দরে বিক্রি করছেন তারা।

সোমবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর বাজারগুলোতে দেখা গেছে, আকারে সবচেয়ে ছোট ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। আর একটু বড় সাইজের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকায়। তবে কোনো ক্রেতা কেবল একটি ডিম কিনলে তাকে দিতে হচ্ছে ১৫ টাকা।

এক সপ্তাহ আগে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে ডিমের ডজন। ঠিক তার আগের সপ্তাহে ছিল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের ডজনে দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা।

তেজগাঁওয়ের এক আড়তদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় ডিমের চাহিদা বেড়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ডিমের দাম বাড়িয়েছে।

তেজগাঁওয়ের আড়তগুলোতে আজ পাইকারি লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা হালি। ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা। আর একশ ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২২০ টাকা। সাদা ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা। এক ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। আর এক’শ ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা।

অন্যদিকে দেশি মুরগির ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, ডজন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকা। হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা হালি, ডজন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। সোনালি মুরগির ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। আর ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। একশ দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকায়।

দাম বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করছে সরকারি বাজার মনিটরিং প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য মতে, সোমবার রাজধানীতে মুরগির লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা হালিতে। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। অর্থাৎ ৫ থেকে ৭ টাকা বেড়েছে।

মাছ-মাংসের দাম বাড়ায় মাসে ২০ থেকে ২২ দিন ডিম খান রাজধানীর মহাখালীর বাসিন্দা শামিম হাসান। তাকে আজ ডিম কিনতে হয়েছে এক পিস ১৫ টাকা করে। এক সপ্তাহ আগে ১১ টাকায় কিনেছিলেন। সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ৪ টাকা।

শামীম হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ডিমের দাম অনেক বাড়তি। আগে যেখানে ২-৩ হালি কিনতাম, সেখানে আজ কিনেছি দেড় হালি।

কেন দাম বাড়ছে? খুচরা ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডিমের কোনো সংকট নেই। তারপরও কেন দাম বাড়ছে তা বলতে পারছি না। আমরা কম দামে আনলে, কম দামে বিক্রি করি। বেশি দামে আনলে বেশি দামে বিক্রি করি, লাভ সীমিত।

মালিবাগ বাজারে বরিশাল জেনারেল স্টোরের মালিক বলেন, আড়তদার ও বড় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ডিমের দাম বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, গত বছরের ঠিক এই সময়ে ডিমের দাম ছিল ৮ টাকা পিস। আজ বিক্রি করছি ১৫ টাকা, দ্বিগুণ দাম বেড়েছে।

মাছ-মাংসের দাম বাড়ায় মাসে ২০ থেকে ২২ দিন ডিম খান রাজধানীর মহাখালীর বাসিন্দা শামিম হাসান। তাকে আজ ডিম কিনতে হয়েছে এক পিস ১৫ টাকা করে। এক সপ্তাহ আগে ১১ টাকায় কিনেছিলেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তেজগাঁওয়ের এক আড়তদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় ডিমের চাহিদা বেড়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ডিমের দাম বাড়িয়েছে।

তেজগাঁওয়ের আড়তদার কাওসার আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পাইকারি বাজারে লাল ডিমের দাম বেড়েছে শতপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা। শুধু লাল ডিম নয়, সাদা ডিম, দেশি মুরগি এবং হাঁসের ডিমের দামও বেড়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন